বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক, এইউজেডনিউজ২৪: বিসিসি-বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল- একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান? হ্যাঁ, এটি একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধিনস্থ সংস্থা। এর গঠন প্রক্রিয়াও অন্যরকম।
জাতীয় কম্পিউটার কমিটি: ১৯৮৩
জাতীয় কম্পিউটার বোর্ড: ১৯৮৮
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অধ্যাদেশ: ১৯৮৯
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আইন: ১৯৯০
প্রথমে ভিন্ন নামে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি ধাপে ধাপে বিসিসি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।
ডিসেম্বর ২০১১ হতে বিসিসি নবসৃষ্ট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
বাংলাদেশে কম্পিউটার কাউন্সিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশকে অগ্রগামী করে তুলতে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে আসছে। বিসিসি সরকারি পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়ন, ই-গভার্ন্যান্স প্রতিষ্ঠা, কানেক্টিভিটি স্থাপন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, আইসিটি সক্ষমতা উন্নয়ন, আইসিটি শিল্পের উন্নয়ন, আইসিটিতে বাংলা ভাষার উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্রান্ডিং এবং সর্বোপরি দেশে উদ্ভাবনী ও স্টার্টআপ সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করছে ।
আমরা কি তার খবরও লইতাম? বিসিবি হতে প্রতিবছর দেশের আইসিটি উন্নয়নে যুবক যুবতীদেরকে ২৭ ধরনের সর্ট কোর্স এবং ৭ ধরনের লং কোর্স করানো হয় অতি স্বল্প মূল্যে। এটা সর্বনিম্ন ২১ ঘন্টা হতে শুরু করে ৬০০ ঘন্টা পর্যন্ত হয়। এসব কোর্স করে অনেকের জীবনের গতিপথই পরিবর্তিত হয়েছে।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সক্ষমতা উন্নয়নে ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৬৯১ জন প্রতিবন্ধীসহ বিসিসি ২৯,২৫৩ জনকে আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে । এর মূল প্রশিক্ষণ সেন্টার হলো Bangladesh Korea Institute of Information and Communication Technology (BKIICT) .
বিসিসির কর্মকান্ড :
আইসিটি বিষয়ে সরকার বা যেকোন প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ দেয়া।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সতর্ক করা বা সেবা প্রদান।
ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রদান।
আইটি ইনজিনিয়রদের পরীক্ষা।
ডিজিটাল অবকাঠামো স্থাপন/উন্নয়ন;
ই-গভর্ণমেন্ট বাস্তবায়ন
তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক শিল্পের প্রসারে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়ন;
তথ্য প্রযুক্তি পেশাজীবীদের Skill Standard নির্ধারণ;
ন্যাশানাল এন্টারপ্রাইজ আর্কিটেকচার ও ইন্টার-অপারেবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক নির্মাণ ও তা কার্যকর করা এবং তথ্য প্রযুক্তি সংক্রান্ত মান ও স্পেসিফকেশনস নির্ধারণ করা;
অর্গানোগ্রাম :
বিসিসি এর জনবল রয়েছে ২৬৫ জন। প্রথম শ্রেণীর যেসব পদ রয়েছে তার প্রায় সবগুলোই প্রফেশনাল আইটি ইনজিনিয়র। এর মূল চালিকা শক্তি হলো এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব পার্থপ্রতিম দেব। দীর্ঘদিন এই সেক্টরে কাজ করা ধীর স্থির শান্ত স্বভাবের জনাব পার্থকে আইট সেক্টরে একজন আইকন বলা যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সিং এখান থেকেই পরিচালনা করা হয়। বিসিএস ৮৫ ব্যাচের এই চৌকশ কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস এ্যাডমিনেস্ট্রেশনের গ্রাজুয়েট তার বর্ণাঢ্য চাকুরী জীবনে বিসিসিকে একটি শক্তিশালী রূপ দিয়েছেন। ইতোপূর্বে সরকারের সাবেক সচিব রংপুরের আরেক কৃতি সন্তান জনাব মাহফুজুর রহমান বিসিসির শক্ত কাঠামো গড়ে দিয়েছেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালককে যারা কঠোর সহযোগিতা করেন তারা হলেন মেম্বর পদে আছেন জনাব মো; রেজাউল করিম, ডাইরেক্টর পদে আছেন জনাব মো; শফিকুল ইসলাম, জনাব এহসানুল পারভেজ, তারেক এম বরকত উল্লাহ, জনাব মোহাম্মদ এনামযুল কবির, সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন চটপটে বুদ্ধিদিপ্ত জনাব মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।
কাউন্সিল কমিটি :
চেয়্যারম্যান – মাননীয় মন্ত্রী ,
ভাইস চেয়্যারম্যান – মাননীয় সচিব,
সদস্য সচিব- ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
আর বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নিয়ে ১২ সদস্যের কাউন্সিল করা হয়েছে।
মেগা প্রকল্প যেগুলো দেশের আইসিটিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে :
ইনফো সরকার প্রকল্প -৩ :
তিনটি ধাপে সম্পন্ন এই প্রকল্পের ১ম ধাপে ছিল বাংলাগভনেট- যেখানে সরকারী অফিসের সাথে বিভাগীয় শহরের কানেকশন দেয়া হয়। জেলা শহর হতে উপজেলায় কানেকশন দেয়ার পর্যায় ছিল ২য় ধাপে । ৩য় পর্যায়ে পূর্বে প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্কটি সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সারা দেশে ২৬০০টি ইউনিয়নকে এই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। এতে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা হয়। এছাড়া ৬৪ টি জেলা ও ৪৮৮ টি উপজেলার মধ্যে Dense Wavelength Division Multiplexing (DWDM) নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। এতে করে ইউনিয়ন পর্যায়ে ২৬,০০০ সরকারী অফিসে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হয়। ১০০০টি পুলিশ অফিসে Virtual Private Network (VPN) সংযোগ প্রদান করা হয়। বিদ্যমান ব্যাকবোন নেটওয়ার্ক এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ফোর টায়ার ডাটা সেন্টার:
ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে বিপুল পরিমাণ ডাটার সৃষ্টি হচ্ছে অথবা হবে। এগুলো সংরক্ষনের জন্য বিসিসি কালিয়াকৈর এ একটি শক্তিশালী অত্যাধুনিক এবং সিকিউরিড ডাটা সেন্টার ১৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করেছে। এখানে সরকারী বেসরকারী গোপনীয় কিংবা প্রয়োজনীয় যেকোন ধরনের ডাটা স্বল্প খরচে সংরক্ষণ করা যায়। এর মূল ফাংশন হলো ডিজিটাল কন্টেট সংরক্ষণের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড গভর্নেস (Leveraging ICT):
আইটি সেক্টরের জন্য ৩০ হাজার দক্ষ জনবল তৈরী করা এ প্রকল্পের অর্জন শতভাগ।। এর মাধ্যমে সাইবার রেসপন্স টিম গঠন সহ ক্লাউড কমপিউটিং প্লাটফর্ম গঠন করা হয়েছে। ৩২ হাজার জনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৭ হাজার জনকে চাকরিতে নিযুক্ত করা হয়েছে। আইটি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের নিমিত্ত আইবিএ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যম স্তরের ৩৫৮ জন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে এবং তৃতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
যুগ্ম সচিব
আইসিটি মন্ত্রণালয়
আইসিটি ভবন
আগারগাঁও ঢাকা।