“আপনি কি আওয়ামী লীগে ফিরে যেতে চান?”— এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে সোজাসাপ্টা জবাব দিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম মাওলা রনি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বর্তমানে তার সেই সুযোগ নেই এবং এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বাস্তব ভিত্তিও নেই।
সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাকে এই প্রশ্নটি করা হলে রনি বলেন, “বাংলাদেশে এখন আওয়ামী লীগ কার্যত নিষিদ্ধ দল। শুধু দল নয়, দলের নেতারা, অফিস, এমনকি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটাও মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। এই বাস্তবতায় কেউ রাজপথে নেমে আওয়ামী লীগ করবে— এটা কল্পনাও করা যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের এমপি ছিলাম, তখনও আমি বিপরীতমুখী চিন্তা করেছি। সরকারের সমালোচনা করেছি, যেটা আমার কাছে অন্যায় মনে হয়েছে, সেটা নিয়েই কথা বলেছি। আমি যেমন ‘নয়া দিগন্ত’-এ কলাম লিখতাম, সেসময়ও আমার বক্তব্যে আপোষ করিনি। বরং রাষ্ট্রপতিও আমাকে বলেছিলেন লেখা বন্ধ করতে। আমি আরও বেশি করে লিখেছি।”
অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক রনির পুরনো কিছু ভিডিওর হেডলাইন তুলে ধরেন যেখানে সরকার, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনাকে ঘিরে বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য ছিল। এ প্রসঙ্গে রনি বলেন, “আপনি কেবল হেডলাইন দেখেছেন, পুরো ভিডিও দেখলে বুঝতেন— আমি কখনোই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু বলিনি। আমি রান্না করেছি, কেউ শুধু লবণ দেখে রান্না বিচার করলে তো হবে না।”
ড. মোহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির মধ্যে সদ্য ঘটে যাওয়া লন্ডনের বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন তোলা হলে, রনি বলেন, “এই বৈঠকটি রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর। এতে ইউনূস সাহেব লাভবান হয়েছেন, বিএনপি হয়নি। বরং এটা বিএনপির জন্য কৌশলগত ভুল।”
তিনি আরও বলেন, “আমি শেখ হাসিনার সমালোচনাও করেছি, ইউনূস সাহেবের সমালোচনাও করেছি। তবে কেউ যদি মনোযোগ দিয়ে শোনেন, তাহলে বুঝবেন, আমি কোন পক্ষ নিচ্ছি না, বরং কনশাসনেস তৈরি করছি। আমার বলার উদ্দেশ্য নেতিবাচক নয়, বরং গঠনমূলক।”
নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে গোলাম মাওলা রনি বলেন, “আমি কোনো দলের বশ্যতা স্বীকার করিনি। আমার বিবেক, আমার জবান সবসময় মুক্ত ছিল। আমি যা ন্যায্য মনে করেছি, সেটাই বলেছি— তা সে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই হোক বা ইউনূস সাহেবের বিরুদ্ধেই।”