বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছেন রুপালি পর্দার ‘রঙিলা নবাব’-খ্যাত অভিনেতা প্রবীর মিত্র। তিনি শরীরে নানাব্যাধি নিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার সকালে প্রবীর মিত্রের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। এ কারণে তাকে সিসিইউ থেকে আইসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়েছে।
প্রবীর মিত্রের ছেলে নিপুণ মিত্র জানান, তার বাবার শারীরিক অবস্থা ভালো না। রবিবার সকালে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে।
সন্তানের কথা, ডাক্তার বলেছেন, বাবার শরীরে ব্লাড থাকছে না। রক্তের প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। শরীরের ঠিকমতো অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রায় দু’সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও সেভাবে কেউ খোঁজ নিচ্ছে না প্রবীর মিত্রের। নিপুণ মিত্র বলেন, বাবার তিন সন্তান। আমরা নিজেদের সামর্থ্যের মধ্যে তার চিকিৎসা করে যাচ্ছি। এখানে চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। সরকার যদি বাবার ব্যাপার অবগত থাকেন, তাহলে চিকিৎসায় একটু বেশি আন্তরিকতা থাকে। বাবা এদেশের সিনেমার জন্য অনেককিছু করেছেন। এখন তিনি সরকারের থেকে এই সাপোর্টটুকু ডিজার্ভ করেন।
”সরকারের কাছে আমরা ডিমান্ড করছি না। ইন্ডাস্ট্রির মানুষ, শিল্পী সমিতি থেকে সরকার, সবাই যদি এক হয়ে সহযোগিতা করে তাহলে আমাদের পরিবার খুশি হবে। আমরা চাই, সরকার থেকে সবাই বাবার পাশে থাকুক। সেটা দেশে চিকিৎসা হোক বা দেশের বাইরে চিকিৎসা হোক না কেন!”
১৯৪৩ সালের ১৮ আগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবীর মিত্র। তার পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। এ কারণেই অনেকে তাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন।
তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- জীবন তৃষ্ণা, সীমার, তীর ভাঙা ঢেউ, প্রতিজ্ঞা, অঙ্গার, পুত্রবধূ, নয়নের আলো, চাষীর মেয়ে, দুই পয়সার আলতা, আবদার, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।