আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উঠে আসার পথে ক্রিকেটারদের কষ্টের জীবন নতুন নয়। অনেক ক্রিকেটারকেই এমন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। উমেশ যাদবের কথাই ধরুন। খনিশ্রমিক বাবা তাঁকে বেশি দূর পড়াতে পারেননি। একসময় বেকার বসে থেকেছেন। ঘুরে দাঁড়িয়েছেন ক্রিকেটে ভরসা রেখে।
আকিলা দনঞ্জয়ার বাবাও তেমন বড় কেউ ছিলেন না। ছুতোরের ঘরে তাঁর জন্ম। স্কুল ক্রিকেট খেলতেই দনঞ্জয়াকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। বাবর আজমকে অবশ্য এমন পথ পাড়ি দিতে হয়নি।
তবে পাকিস্তান অধিনায়কের উঠে আসার পথও মসৃণ ছিল না। ক্রিকেটার হওয়ার পথে বাবর শৈশবেই জীবনের একটি পাঠ শিখেছিলেন—কোনো কিছু প্রয়োজন বা পছন্দ হলে চেয়ে নয়, অর্জন করে নিতে হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইনজামাম-উল-হককে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাবর। সেখানে নিজের এ অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন তিনি। উঠে আসার পথে যেসব চ্যালেঞ্জ তাঁকে সামলাতে হয়েছে, সে প্রসঙ্গে বাবর এক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন।
অনূর্ধ্ব-১৫ দলে সুযোগ পাওয়ার পর তাঁর অনুশীলনের জন্য খেলার জুতা ছিল না, ‘আমার ভাইকে (কাজিন) বলেছিলাম দেওয়ার মতো এক জোড়া জুতা থাকলে আমাকে ধার দিতে। সে নেই বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।’
বাবর সে সময় হতাশ হলেও একটি শিক্ষা নিয়েছিলেন জীবন থেকে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কারও সাহায্য চাওয়া অনুচিত, ‘সেদিন বুঝেছিলাম, চাওয়া উচিত হয়নি। জুতা চাওয়াটা অনুচিত ছিল।’ সেই শিক্ষা থেকেই বাবর বুঝতে পেরেছিলেন, ‘(সেদিন) আমি সিদ্ধান্ত নিই, নিজের জন্য কিছু দরকার হলে সেটা অর্জন করে নিতে হবে।’
বাবরের এ মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পক্ষে–বিপক্ষে আলোচনা শুরু হওয়ায় মন্তব্যটা ব্যাখ্যা করে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন বাবরের বাবা আজম সিদ্দিকি, ‘একটি শিশু কেডস চাইতেই পারে। আরেকটি শিশুর কাছে তা না থাকতেই পারে কিংবা সে না দিতেও পারে (যে কারণেই হোক)। এটা এমন কোনো ব্যাপার নয়।’
বাবর আত্মসম্মানবোধ থেকে এ কথা বলেছেন, সেটাও বুঝিয়ে দেন আজম সিদ্দিকি। তিনি জানান, তাঁর ছেলের অনেক স্পনসর থাকলেও কখনো কারও জন্য অতিরিক্ত কিছু চাননি, ‘ব্যাট, হেলমেট, জুতা কিংবা ট্র্যাকস্যুট—যা–ই হোক না কেন, যতটুকু দরকার, সে সব সময় ততটুকুই অর্ডার করে।’