ইসমাইল হোসেন রবিন, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক ইউসুফ পাটওয়ারী দীর্ঘদিন থেকে ‘অজানা’ মাংসের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। স্থানীয় হোটেলে মাংসগুলো গরুর মাংস হিসেবে চালিয়ে দিলেও সেগুলো আসলে কিসের মাংস তা সুনির্দিষ্টভাবে জানে না কেউ।
বিগত কয়েক বছর থেকে অনেকটা গোপনে জেলা শহরের মাদামে একটি গোডাউনে মাংসগুলো রেখে তিনি এ ব্যবসা চালিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাদাম এলাকা থেকে প্রায় ৬ মণ মাংস জব্দ করেছে পুলিশ।
এ সময় তার দুই কর্মচারীকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার শাহ আলমের ছেলে মো. শাকিল (২৭) ও লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে রহিম (৩০)।
তাদের মধ্যে শাকিল শ্রমিকলীগ নেতা ইউসুফ পাটওয়ারীর ম্যানেজার এবং রহিম একজন অটোরিকশা চালক।
মাংসগুলো বৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শ্রমিকলীগ নেতা ইউসুফ পাটওয়ারী।
তিনি দাবি করেছেন, তার কাছে মাংসগুলো কিনে আনার বৈধ কাগজপত্র আছে। তবে মাংসগুলো কিসের জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো গরু বা মহিষের মাংস। যদিও সেগুলো আসলে কিসের মাংস তা সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারেনি আটকরা।
গত কয়েক বছর ধরে এগুলো গরুর মাংস হিসেবে জেলার বিভিন্ন খাবারের হোটেলে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণত গরুর মাংসের চেয়ে এগুলোর দাম অনেক কম।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জকসিন বাজারের একজন মাংস বিক্রেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সাধারণত গরুর মাংস তারা ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। কিন্তু তার পার্শ্ববর্তী একজন মাংস ব্যবসায়ী ভারত থেকে আমদানি করা এ মাংস কম দামে কিনে এনে গরুর মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে কসাইয়ের কাজ করছি। গরু, ছাগল বা মহিষের মাংস দেখলেই বুঝি। কিন্তু এগুলো কিসের মাংস তা বোঝা যায় না।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে ঢাকা থেকে ইকোনো পরিবহনের মাধ্যমে ১৫ বাক্স মাংস লক্ষ্মীপুরে নিয়ে আসা হলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মাংসগুলো জব্দ করা হয়। এসময় গাড়ি থেকে সেগুলো নামানোর সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল হক বলেন, মাংসগুলো কিসের তা বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাংসসহ আটক দুইজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।