রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় তিন আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মাহমুদুল হাসানের নাম উঠে এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বৃহস্পতিবার তাঁরা জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি দেওয়া তিন আসামি হলেন টিটন গাজী, আলমগীর ও মনির ওরফে ছোট মনির।
জবানবন্দি সম্পর্কে অবগত সূত্রগুলো বলছে, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। লাল চাঁদের সঙ্গে মামলার অন্যতম আসামি মাহমুদুল হাসান মহিনের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে লাল চাঁদকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
অবশ্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, পল্লী বিদ্যুতের চোরাই তার ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত ব্যক্তি ও খুন হওয়া লাল চাঁদ পূর্বপরিচিত ছিলেন।
শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, ঘটনা চলাকালে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মবের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছেন। ‘চাঁদাবাজদের জায়গা নাই, ব্যবসায়ীদের ভয় নাই’ এমন স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে মহিন ও পাশের এলাকা থেকে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপকারী দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৯ জুলাই মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে লাল চাঁদকে হত্যা করে একদল লোক। পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে তাঁর মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাঁকে বিবস্ত্র করা হয়। তাঁর শরীরের ওপর উঠে ঘাতকদের লাফাতেও দেখা গেছে।
এ হত্যার ঘটনায় পরদিন রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রেজওয়ান উদ্দিন, মো. নান্নু কাজী, সজীব ব্যাপারী, রাজীব ব্যাপারী, টিটন গাজী, মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, আলমগীর ও মনির ওরফে ছোট মনির। এরই মধ্যে আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।